‘যোগ্যতা থাকলে বিসিএসে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপার না’

‘যোগ্যতা থাকলে বিসিএসে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপার না’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েও বাড়ি থেকে দূরে হওয়ায় সেখানে ভর্তি হননি। পরে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া অনিন্দ্য বিশ্বাস। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি শুরু করেন বিসিএসের প্রস্তুতি। সাফল্যও পেয়ে যান দ্রুত। প্রথম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েই ৪১তম বিসিএসে পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে সপ্তম হয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষ থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করেন অনিন্দ্য বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় বর্ষ থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলেও সিরিয়াসলি প্রস্তুতি নিতে থাকি শেষ বর্ষে এসে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে স্নাতক পরীক্ষা শেষ হয়। এরপর দেখলাম, বাসায় বসে ঠিক পড়া হচ্ছে না। তাই বাসার পাশেই একটা লাইব্রেরিতে যাওয়া শুরু করলাম, যা পড়তাম, সব নোট করতাম। নতুন তথ্য বা অপরিচিত তথ্য সব নোটখাতায় টুকে রাখা শুরু করলাম। এতে পড়াটাও ভালো হতো এবং আমার নোটখাতা সমৃদ্ধ হতে থাকল। এরপর আসল মহামারি করোনাভাইরাস, সব কিছু থমকে গেল। বাসায় সময়টা কাজে লাগানোর জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষা দিতাম। এভাবেই ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার আগেই আমার চার–পাঁচবার সিলেবাস শেষ হয়।’

বিসিএস প্রিলিমিনারির প্রস্তুতি ভালো থাকায় এখন পর্যন্ত টানা চারবার প্রিলি পাস করেছেন অনিন্দ্য বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘৪১তম বিসিএসের পর ৪৩তম ও ৪৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পাস করে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছি, ফল এখনো হয়নি। ৪৫তম বিসিএসেও প্রিলিমিনারি পাস করেছি, তবে লিখিত পরীক্ষা এখনো হয়নি।’

অনিন্দ্য বিশ্বাস বলেন, ‘প্রিলি পাস করার পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার জন্য গণিত ও অনুবাদ অনুশীলন করতাম। নিয়মিত পত্রিকা পড়তাম। লিখিত পরীক্ষার জন্য অনেক বই পড়েছি। লিখিত পরীক্ষায় পাস করা সহজ কিন্তু ক্যাডার পাওয়া কঠিন। অল্প সময়ে অনেক কিছু লিখতে হয়, তাই মডেল টেস্ট দিয়ে আরও ভালো প্রস্তুতি নিতাম। গ্রুপ করে পড়াশোনা করতাম আমরা, একে অপরের নোট শেয়ার করতাম, এতে নিজের লেখার মান বাড়ত। ৪১তম বিসিএস আমার প্রথম বিসিএস পরীক্ষা হওয়ায় প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম না। আরেকটু গোছানো প্রস্তুতি হলে হয়তো ওপরের দিকের ক্যাডার পেতাম।’

৪১তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পর আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় অনিন্দ্য বিশ্বাসের। তিনি বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষায় যখন পাস করলাম, তখন মনে হলো একটা সুযোগ আছে। ভাইভাতে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার মতো কোনো সুনির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। তাই বাংলাদেশ, ক্যাডার চয়েস, জেলা, মুক্তিযুদ্ধ , বঙ্গবন্ধু, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি অনেক উপন্যাস ও ইতিহাসবিষয়ক বই পড়েছি। ভাইভার জড়তা কাটানোর জন্য মক ভাইভা বেশ কাজের। প্রথম বিসিএসে যদিও ক্যাডার আসবে ভাবিনি, তবে সৃষ্টিকর্তা সহায় হওয়ায় পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার চলে এসেছে।’

admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *