৩৪৭২ পদে সমন্বিত নিয়োগ, বেছে নিন পছন্দের ব্যাংক
তাই নিজের বিভাগে পদায়ন পেতে এই দুটি ব্যাংক থেকে আপনার বিভাগের সঙ্গে সামঞ্জস্যটি পছন্দক্রমের প্রথমে দিয়ে অন্যটি পরের দিকে দিতে পারেন। সব ব্যাংকেই শাখা ও শূন্যপদ থাকা সাপেক্ষে নিজ জেলায় পদায়নের সুযোগ আছে। তবে সব ব্যাংকের ক্ষেত্রেই এক শাখায় তিন-চার বছরের বেশি থাকার সুযোগ নেই।
এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) পদে ব্যাংকার বা অর্থনীতিবিদ থেকে সরকার নিয়োগ দিয়ে থাকে। জিএম, ডিএমডি ও এমডি পদগুলোতে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে ট্রান্সফারের সুযোগ রয়েছে। একটি ব্যাংকের প্রমোশন সময়ভেদে ধীর বা দ্রুত হতে পারে। এমনও দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে প্রমোশন হলেও ২০১৫ সাল থেকে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রমোশন কিছুটা ধীর হয়ে গেছে। প্রমোশন বিবেচনায় বর্তমানে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন, সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক প্রভৃতি পছন্দক্রমের প্রথম দিকে রাখতে পারেন।
লোন সুবিধা ও ইনসেন্টিভস : প্রায় সব ব্যাংকেই নিজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য বেসিক হিসেবে বার্ষিক ইনসেন্টিভস/এক্সগ্রেশিয়া (ব্যাংকভেদে সাত-আটটি পর্যন্ত), হাউস লোন (ব্যাংকভেদে এক কোটি ৩০ লাখ পর্যন্ত), এজিএম থেকে কার মেইনটেন্যান্স ও কার লোন (ব্যাংকভেদে ৪০ লাখ পর্যন্ত), মোটরসাইকেল লোন (ব্যাংকভেদে তিন লাখ পর্যন্ত), কম্পিউটার লোন (ব্যাংকভেদে ৮৫ হাজার পর্যন্ত), পারসোনাল লোন (সব ব্যাংকে নেই) সুবিধা রয়েছে। এটি ব্যাংকিং ক্যারিয়ারের একটি ইতিবাচক দিক এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল জীবনযাপন করার জন্য দারুণ অনুষঙ্গ। ইনসেন্টিভস ও লোন সুবিধার ক্ষেত্রে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন ও সোনালী ব্যাংককে পছন্দের প্রথম দিকে রাখতে পারেন।
কর্মপরিবেশ ও কাজের চাপ: কর্মপরিবেশ ও কাজের চাপ নির্ভর করে একটি ব্যাংকের শাখার সংখ্যা, কাজের পরিধি, কর্মকর্তার সংখ্যা ও গ্রাহকের সংখ্যার ওপর। শাখায় গ্রাহক বেশি ও কর্মকর্তা কম হলে কাজের চাপ বেশি এবং বিপরীতভাবে উল্টো। কর্মপরিবেশ নির্ভর করে শহর ও গ্রামাঞ্চলের শাখা, শাখা ব্যবস্থাপক ও কর্তৃপক্ষের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কর্মপরিবেশ ও কাজের চাপ তুলনামূলক কম পেতে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে রূপালী ব্যাংক, বিশেষায়িত ও নতুন ব্যাংক (যেমন- কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ইত্যাদি) পছন্দক্রমের প্রথম দিকে রাখতে পারেন।
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা: সব ব্যাংকের কর্মকর্তারা (বেসিক ব্যাংক ব্যতীত) জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসারে অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতো মূল বেতন, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, বিশেষ প্রণোদনা ভাতা, সন্তানদের শিক্ষা সহায়ক ভাতা, উৎসব ভাতা, পেনশন সুবিধাসহ সব সরকারি সুবিধা পেয়ে থাকেন। এর বাইরে ব্যাংক কর্মকর্তারা প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে লাঞ্চ ভাতা, মাঠ পরিদর্শনকালে যাতায়াত ভাতা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) প্রভৃতি পেয়ে থাকেন। যোগদানের পর একজন কর্মকর্তাকে ব্যাংকের নিজস্ব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ৩০ দিন বা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়জুড়ে বনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এ ছাড়া কর্মজীবনে দেশে বা দেশের বাইরে অন্যান্য প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হতে পারে।
অন্যান্য সরকারি চাকরির পাশাপাশি ব্যাংকে চাকরি করে একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতি ও শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে, অন্যদিকে আকর্ষণীয় বেতন ও আর্থিক প্রণোদনায় সচ্ছল জীবনযাপন করাও সম্ভব। পাশাপাশি চাকরির নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা ও ব্যক্তিগতভাবে সেবাগ্রহীতাদের কাছে পরিচিতি পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। তবে আর্থিক দায়িত্ব ও কাজের চাপ, সারা দিন হিসাব-নিকাশের সঙ্গে থাকা, আর্থিক বিষয়াদি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি অনেকের কাছেই জটিল কাজ মনে হতে পারে।